কেন ব্যাংকার হবেন, কেন নয়?- Bank Job

 কেন ব্যাংকার হবেন, কেন নয়?- Bank Job
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::

Bank Job

বর্তমানে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে একটি আকর্ষনীয় ও চ্যালেঞ্জিং পেশার নাম হলো ব্যাংকিং। সুতরাং ব্যাংকের চাকরির বিভিন্ন দিক নিয়ে তাদের মধ্যে কৌতূহল থাকাটাই স্বাভাবিক। চলুন, প্রথমেই ব্যাংকের চাকরির খারাপ দিকগুলো জেনে নেই।Bank Job

কর্মব্যস্ততাঃ 

যদিও ব্যাংকিং শুরু হয় সকাল দশটা থেকে কিন্তু একজন ব্যাংকারকে ব্যাংকে উপস্থিত হতে হয় দশটা বাজার কিছু আগেই। তারপর ব্যাপক ব্যস্ততার মাঝে কাটে সারাদিন। অনেক সময় ব্যক্তিগত জরুরী ফোন রিসিভ করে কয়েক মিনিট কথা বলার সময় হয়না, দিনের আলো দেখা তো পরের কথা। Bank Job

Bank Focus Writing- COVID 19

 সন্ধ্যা ছয়টায় অফিস ছুটি হলেও সেটা কাগজ-কলমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ ছুটির সময় অনির্দিষ্ট। দৈনন্দিন কাজ শেষে হিসাব মেলানোর পর মেলে ছুটি। তাতে সাতটা বাজুক আর দশটা বাজুক। এই পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন কিনা ব্যাংকার হতে চাওয়ার আগে সেটা ভেবে দেখুন।

৪০তম বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা

ঝুকিঃ 

ব্যাংকের মূল কাজ হচ্ছে অর্থ সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ করা। তাই সারাদিন আপনি যা করবেন মোটামুটি সবকিছুর সাথেই টাকা-পয়সা জড়িত। সেজন্য ব্যাংকের প্রতিটি কাজই পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে করতে হয়।

 একটু ভুল হলেই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আর টাকা একবার কারো কাছে চলে গেলে তা ফেরত পাওয়ার আশা না করাই ভালো।


একঘেয়েমি কাজঃ

 ব্যাংকে নিত্যনতুন কাজ খুব কম। প্রতিদিন অফিস শুরু হয় একই রকম কাজ দিয়ে। এভাবে চলতে থাকে দিনব্যাপী। এতে মাঝে মাঝেই আপনার একঘেয়েমি চলে আসতে পারে। তবে শাখা অফিস ব্যতিরেকে বিভিন্ন কন্ট্রোলিং অফিসে পদায়ন হলে কিছুটা স্বস্তি পাবেন।


মানসিক টেনশনঃ 

ব্যাংকের কাজ শুধু ঋণ দেওয়া না, ঋণ আদায় করাও। আর ঋণ আদায় করা সহজ কোন কাজ নয়। এজন্য ঋণগ্রহীতার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হয়। তাছাড়া ঋণ আদায়, বিতরণ, আমানত সংগ্রহ করার জন্য প্রতিটি শাখায় লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া থাকে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন একটা বড় চ্যালেঞ্জ।


ছুটির অভাবঃ 

সপ্তাহের পাঁচটা দিন চরম পরিশ্রমের পর সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার নিজের মত করে কাটানোর ইচ্ছা আপনি করতেই পারেন। কিন্তু না, মাঝে মাঝে আপনাকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ট্রেনিং করতে বা ঋণ আদায়ের জন্য অফিস করতে হতে পারে। 

অন্যান্য চাকরির মত ব্যাংকারদেরও সব ছুটির বিধান থাকলেও তাঁরা সহজে ছুটি পান না। জুন ও ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকের অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক হিসাব সমাপনী সম্পন্ন হয়। সেসময় ছুটি চাওয়া তো মহাঅপরাধ। BCS written exam preparation guidelines-English

তাছাড়া ঈদ, পুজা, বিভিন্ন উৎসব ও বিশেষ বিশেষ সময়ে যখন সবার অফিস বন্ধ, তখন আপনাকে অফিস করতে হতে পারে। যেমনঃ দেশের কোথাও নির্বাচন, করদাতারা কর দেবেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতন নেবেন, প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাবেন, সেজন্য ব্যাংক খোলা রাখতে হয়। কাজেই, নিজেকে ভালোভাবে প্রশ্ন করুন এই জীবন আপনি চান কি-না।

এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনার ব্যাংকার হওয়ার সাধ মিটে গেছে! এত তাড়াতাড়ি মিটলে হবে? চলুন, এবার ভালো দিকগুলো সম্পর্কে একটু জানি। Bank Job


সামাজিক মর্যাদাঃ 

সমাজে ব্যাংকারদের একটু আলাদা নজরেই দেখা হয়। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে বিয়ের বাজার সবখানেই আপনাকে গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। বাড়ী ভাড়া নিতে যাবেন, ব্যাংকার শুনলে ব্যাচেলর হলেও বাড়ী ভাড়া দেবে ইনশাআল্লাহ!

44 তম বিসিএস  - পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি - গাইডলাইন - বুকলিস্ট !!  

পদোন্নতিঃ 

চাকরিতে যোগদানের পর যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে চিন্তা আসে তার একটি হলো পদোন্নতি। পদোন্নতি না থাকলে বা সুযোগ কম হলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। 

কিন্তু ব্যাংকের চাকরিতে অন্যান্য চাকরির চেয়ে পদোন্নতি অনেক দ্রুত একথা সকলেই এক বাক্যে মেনে নেবেন। চাকরির তিন বছর পূর্ণ হলেই আপনি পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন। অন্য কোন চাকরিতে এটা কল্পনাই করতে পারবেন না।

গৃহ নির্মাণ ঋণঃ 

ব্যাংকার অতচ একটি বাড়ী বানাননি বা ফ্ল্যাট কেনেননি এরকম একজনও নাই বললেই চলে। কারণ চাকরির বয়স পাঁচ বছর হলে একজন সিনিয়র অফিসার ব্যাংক রেটে আশি লক্ষ টাকার মত গৃহ নির্মাণ ঋণ পেয়ে থাকেন।

গাড়ী লোনঃ 

এজিএম পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর আপনি কার লোন পাবেন মোটামুটি ভালো একটা এমাউন্ট। কার কেনার পর প্রত্যেক মাসে কার মেইনটেনেন্স কস্টও ব্যাংক আপনাকে দেবে যতদিন পর্যন্ত না আপনার লোন পরিশোধ হয়। ফলে মেইনটেনেন্সের টাকা দিয়েই আপনি লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন। সুতরাং বলা যায় কারটা একদম ফ্রিতেই পাচ্ছেন।

মটরসাইকেল ঋণঃ 

চাকরি বয়স ১ বছর হলে কম-বেশি ২ লক্ষ টাকা মোটরসাইকেল ঋণ পাবেন।  Bank Job


কম্পিউটার ঋণঃ

 চাকরির বয়স ১ বছর পূর্ণ হলে কম্পিউটার কেনার জন্য ভালো একটা এমাউন্ট কম্পিউটার ঋণ পাবেন।

লাঞ্চ ভাতাঃ 

ব্যাংকে উপস্থিত হলেই আপনি দুইশত টাকা লাঞ্চ ভাতা পাবেন। হয়তো খুব শীঘ্রই এই ভাতা বেড়ে যাবে। যদি না বাড়েও, তাহলেও অন্যান্য অনেক চাকরির থেকে আপনি মাসে কমপক্ষে চার হাজার টাকা বেশি পাচ্ছেন।

ইনসেনটিভ বোনাসঃ 

ঈদ বা পুজা, নববর্ষ ভাতা ছাড়াও ব্যাংকের মুনাফার উপর ভিত্তি করে প্রতি বছর আপনি এক বেসিক থেকে শুরু করে পাঁচটা বা তারও বেশি ইনসেনটিভ বোনাস পাবেন। অতিরিক্ত এই টাকা দিয়েই আপনি প্রিয়জনকে নিয়ে একটা চমৎকার ট্যুর দিয়ে আসতে পারবেন।

ক্যালেন্ডারঃ 

বছর শেষে নতুন বছরের ক্যালেন্ডার দেবে ব্যাংক। সুতরাং বাসার জন্য ক্যালেন্ডার কিনতে হবেনা বা কারো কাছে চাইতে হবেনা।

উচ্চশিক্ষা ও বিদেশ ভ্রমণঃ উচ্চশিক্ষা ও বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আছে। এতে রথ দেখাও হয় কলা বেচাও হয়। 

সিজারিং ব্যয়ঃ 

ছেলে হোক আর মেয়ে হোক, সর্বোচ্চ দুটি সন্তানের সিজারিং ব্যয় ব্যাংক দেবে।

চিকিৎসা ব্যয়ঃ

 আপনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছেন, ব্যাংক আপনার চিকিৎসা ব্যয়ে অবদান রাখবে।

শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতাঃ 

চাকরির বয়স ৫ বছর পূর্ণ হলে প্রতি ৩ বছর পর পর ব্যাংক আপনাকে ১৫ দিনের ছুটি দেবে শ্রান্তির জন্য। শুধু তাই না, বিনোদন করার জন্য ১ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থও দেবে।

ক্লোজিং ভাতাঃ 

প্রতি অর্থ বছরের ডিসেম্বর ও জুন মাসে অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক হিসাব সমাপনী হয়। এ উপলক্ষে কিছু ভাতা পাবেন।

সরকারি বেসরকারি সকল চাকরির খবর পড়তে মাদের চাকরির খবর পেজে ভিজিট করুন।

প্রেষনঃ

 ব্যাংক থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে প্রেষনে কাজ করার সুযোগ আছে। প্রেষন নিয়ে পরে লিখবো।

লিয়েনঃ 

আপনি লিয়েন সুবিধাও পাবেন ব্যাংকের চাকরিতে। লিয়েন নিয়ে পরে লিখবো।

বিসিএস প্রিলির আগামী ৫০ দিনের প্রস্তুতির কৌশল

এক্সট্রাওডিনারি পারফরম্যান্সে ইনক্রিমেন্টঃ ব্যাংকের স্বার্থে এক্সটাওডিনারি কোন কিছু করার জন্য একটি বা দুটি ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার বিধান রয়েছে।


প্রশিক্ষণঃ

 নিজ প্রতিষ্ঠানের ট্রেনিং সেন্টার ছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে।


নিজ এলাকায় পদায়নঃ

 এটা ব্যাংকের চাকরির আরেকটা ভালো দিক। ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই কোন প্রকার লবিং ছাড়াই আপনার পদায়ন হবে নিজ জেলায়। নিজ এলাকায় থেকে চিরচেনা পরিবেশ চাকরি করার মাঝেও অন্যরকম একটা ভালোলাগা আছে।


জনসেবা করার সুযোগঃ 

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও দুঃস্থ স্বামী পরিত্যাক্তা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, শিক্ষা ভাতা, কৃষকদের দশ টাকার হিসাব পরিচালনা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির টাকা প্রকৃত ভাতাভোগীর নিকট বিতরণের মাধ্যমে জনসেবা করার সুযোগ রয়েছে।


আর্থিক ক্ষমতাঃ 

আর্থিক ক্ষমতা ব্যাংক জবের একটি ভালো দিক। আপনি জনগনকে বিপদের সময় সরাসরি টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেন যা অনেক চাকরিজীবীই পারেন না।


অর্থনীতিতে অবদানঃ

 ব্যাংক মূলত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। একজনের হয়তো অনেক টাকা আছে কিন্তু তিনি বিনিয়োগ করতে ভয় পান অথবা চান না, আবার একজনের হয়তো টাকা নাই কিন্তু তিনি ঝুকি নিয়ে বিনিয়োগ করতে রাজি। 

ব্যাংকে টাকাওয়ালার কাছে থেকে আমানত সংগ্রহ করে বিনিয়োগকারীকে ঋণ দিয়ে শিল্প, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পল্লী উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। একজন ব্যাংকার হিসেবে এসব কাজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থেকে দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রাখা যায়।

সুইচ করার সুযোগঃ দেশে সরকারী বেসরকারী মিলে ৬৩ টি ব্যাংক রয়েছে। রয়েছে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। যাঁরা ভালো কাজ করেন, তাঁরা অন্য ব্যাংকের নজরে আসেন। বেশি বেতনে অন্য ব্যাংকগুলো তাঁদের নিয়ে নেয়।

এখন সিদ্ধান্ত আপনার!


সৈকত তালুকদার

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে কর্মরত ও ৩৬ তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। 

বিসিএস সর্ম্পকে  যানতে  BCS SPECIAL

বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি যানতে আমাদের আছে  JOB NOTICE

বিভিন্ন চাকরি পরিক্ষার ভাইভা অভিজ্ঞতা পড়তে আমাদের আছে  VIVA EXPERIENCE

বিসিএস লিখিত পরিক্ষার প্রস্ততি নিতে আমাদের আছে BCS WRITTEN PREPARATION

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url